PS Camera, Semi-SLR এবং Mobile
দিয়ে ভালো ছবির জন্য সাধারণ
পালনীয় কিছু নিয়ম
–
১. মোড
অধিকাংশ ক্যামেরাতেই
অনেকগুলো শুটিং মোড থাকে,
যেমন: ইজি, অটো বা প্রোগ্রাম,
শাটার প্রায়োরিটি,
অ্যাপার্চার প্রায়োরিটি,
ম্যানুয়াল। এছাড়াও বেশ কিছু
প্রিসেট/সীন মোড থাকে, যেমন:
Sunset, Beach, Snow, Foliage, Night,
Fireworks, Pets, Sports ইত্যাদি।
পরিস্থিতি বুঝে প্রিসেট
মোডগুলো দিয়ে ছবি তুলতে
পারেন, অনভিজ্ঞদের জন্য
ভালোই ফলাফল দিয়ে থাকে।
তবে আগেভাগেই নিজের
ক্যামেরায় এই মোডগুলো নিয়ে
পরীক্ষানিরীক্ষা করে হাত
পাকিয়ে রাখুন, যাতে
প্রয়োজনের সময় হঠাৎ খেই
হারিয়ে না ফেলেন। শুটিং
মোড-এর মধ্যে নতুনদের জন্য অটো
বা প্রোগ্রাম মোড হলো সবচেয়ে
নিরাপদ। একটু অভিজ্ঞ হলেই অন্য
মোডে ছবি তোলা শুরু করুন – সেসব
নিয়ে অন্যান্য পর্বে লিখবো।
২. জুম অপশন:
জুম দুরকমের – অপটিক্যাল ও
ডিজিটাল। অপটিক্যাল জুমে
ক্যামেরার লেন্সকে অ্যাডজাস্ট
করে দূরের জিনিসকে কাছে
দেখানো হয়; আর ডিজিটাল জুমে
ক্যামেরার সফটওয়্যার দিয়ে
ছবিকে বড়/ম্যাগনিফাই করা হয়।
অপটিক্যাল জুম যখন এনগেজ হবে
লেন্সের ভেতরের বিভিন্ন
এলিমেন্টের অবস্থান পরিবর্তন
হবে মেকানিক্যাল স্টেপার
মোটরের সাহায্যে, এবং প্রায়
সকল ক্যামেরাতেই সে সময়
মোটরের ও লেন্সের নড়াচড়ার
শব্দ শুনতে পাবেন; অনেক
ক্যামেরাতেই ডিসপ্লেতে
আপনাকে দেখাবেও কতটুকু জুম
অর্জিত হলো (2x, 3x ইত্যাদি)।
ক্যামেরার সর্বোচ্চ অপটিক্যাল জুম
অর্জিত হবার পর আরো জুম করতে
চাইলে ডিজিটাল জুম এনগেজ হয়,
এবং ডিসপ্লেতে ডিজিটাল জুম
যে এনগেজ হয়েছে সে রকম কোন
চিহ্ন বা মেসেজ বা রংয়ের
পরিবর্তন দেখতে পাবেন
(ম্যানুয়াল দেখে নিশ্চিত হোন
আপনার ক্যামেরার ক্ষেত্রে কি
ধরনের ইন্ডিকেশন)। ডিজিটাল
জুমের সময় লেন্স বা মোটরের কোন
নড়াচড়া হবেনা, তাই কোন শব্দও
শোনা যাবেনা। বেশিরভাগ
মোবাইল হ্যান্ডসেটেই শুধুমাত্র
ডিজিটাল জুম আছে, অপটিক্যাল
জুম নেই।
জুম করার প্রয়োজন হলে শুধুমাত্র
অপটিক্যাল জুম দিয়েই ছবি তুলবেন,
ডিজিটাল জুম পারত ব্যবহার করবেন
না। ডিজিটাল জুম মাত্রই
আপনাকে নিম্নমানের ছবি
দেবে। ছবিকে বড় করার দরকার
হলে কম্পিউটারে ট্রান্সফার করার
পর কোন ইমেজ এডিটিং সফটওয়্যার
(যেমন ফটোশপ) দিয়ে বড় করবেন।
ডিজিটাল জুম এনগেজ করলে এই
একই কাজই ক্যামেরার বিল্ট-ইন
সফটওয়্যার করে থাকে। কিন্তু
ক্যামেরার সফটওয়্যারের চেয়ে
কম্পিউটার সফটওয়্যারগুলো যেহেতু
অনেক উন্নতমানের ও
সফিসটিকেটেড অ্যালগরিদম
ব্যবহার করে, কম্পিউটারে কাজটি
করলে ক্যামেরার চেয়ে বেশ
খানিকটা ভালো ফল পাওয়া
যায়। নেহায়েতই কম্পিউটার
সফটওয়্যার ব্যবহারে অপারগ হলে
ডিজিটাল জুম ব্যবহার করবেন,
অন্যথায় নয়। তবে খেয়াল রাখবেন,
কম্পিউটারেই করুন আর
ক্যামেরাতেই করুন, ডিজিটাল জুম
সবসময়ই আপনার ছবির শার্পনেস
কমিয়ে ফেলবে এবং ছবির মান
খারাপ হয়ে যাবে।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি
ডিজিটাল জুমকে নিজের জন্য
নিষিদ্ধ জ্ঞান করি, এবং আমার
ক্যামেরায় ডিজিটাল জুম
পুরোপুরি বন্ধ করে রেখেছি
যাতে বেখেয়ালেও কখনো
ডিজিটাল জুম এনগেজ হয়ে না
যায়।
৩. ছবির সাইজ
আপনার ক্যামেরাটি যত
মেগাপিক্সেলেরই হোক
সাধারণত কয়েকটি বিভিন্ন
সাইজে ছবি তোলার সুযোগ
তাতে দেয়া থাকবে। বড়র দিকে
সর্বোচ্চ মেগাপিক্সেলে (Large),
ছোটর দিকে সাধারণত ৬৪০x৪৮০
(Small বা ই-মেল সাইজ), এবং
মাঝামাঝি আরো ২ বা ৩ টি
সাইজ। পর্যাপ্ত স্টোরেজ/
মেমোরী কার্ড থাকলে চেষ্টা
করবেন বড়র দিকে ছবি তুলতে।
কোন ছবিটি যে অসাধারণ হয়ে
যাবে আপনি আগে থেকে জানেন
না, একটি অসাধারণ ছবি ছোট
সাইজে তুলে ফেলে পরে যেন না
পস্তান সে জন্য বড় করেই ছবি তুলুন।
বড় ছবি সবসময়ই আপনি ছোট করতে
পারবেন শার্পনেসের কোন
ব্যাঘাত না ঘটিয়েই, কিন্তু ছোট
ছবি বড় করতে গেলেই তার মান
কমে যাবে (ডিজিটাল জুম)। বড়
করে ছবি তোলার আরেকটি
সুবিধা হলো ছবির অংশবিশেষ
কেটে নিলেও আপনার হাতে
একটি বড় ইমেজ থাকবে।
৪. ছবির কোয়ালিটি
প্রায় সব ক্যামেরাতেই ছবির
কোয়ালিটি কী রকম চান তা
নির্ধারণের সুযোগ থাকে
(ফাইনেস্ট বা বেস্ট কোয়ালিটি
থেকে নিচের দিকে কোর্স বা
লোয়েস্ট কোয়ালিটি,
মাঝামাঝি আরো ১/২ টি ধাপ
যেমন, অ্যাভারেজ)। আবারো
পর্যাপ্ত স্টোরেজ/মেমোরী
কার্ড থাকলে চেষ্টা করবেন সবসময়
বেস্ট কোয়ালিটিতে ছবি
তুলতে। পরে চাইলে আপনি
কোয়ালিটি ডিগ্রেড করতে
পারবেন, কিন্তু লো কোয়ালিটির
ছবি আপগ্রেড করার সুযোগ নেই
বললেই চলে।
৫. ফ্লাশ
যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন ফ্লাশ
ব্যবহার না করেই ছবি তুলতে,
দিনের বেলায় আউটডোরে
ফ্লাশের দরকার হয় না (কিছু
বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া, পরে
কখনো আলোচনা করবো)। কিন্তু
ইনডোরে ফ্লাশ দরকার হয়ে পড়ে।
ইনডোরে দরকার হলেও প্রথমে
চেষ্টা করবেন ফ্লাশ ছাড়াই
চালানো যায় কিনা, অর্থাৎ সব
বাতি জ্বালিয়ে দিয়ে, বাড়তি
বাতির বা বাইরের আলো পর্যাপ্ত
ঢোকার ব্যবস্থা করে। সেরকম
ব্যবস্থা করা না গেলেই কেবল
ফ্লাশ ব্যবহার করবেন। তবে খেয়াল
রাখবেন স্থির নয় এমন সাবজেক্টের
(যেমন শিশু বা প্রাণী) ইনডোর ছবি
তোলার সময় ফ্লাশ ব্যবহার করাই
যুক্তিযুক্ত। আরেকটি বিষয় খেয়াল
রাখবেন – বেশিরভাগ
ক্যামেরারই বিল্ট-ইন ফ্লাশটির
কার্যকরী দুরত্ব ১০-১২ হাতের
বেশি নয়, এর চেয়ে দূরের জিনিস
ফ্লাশ ব্যবহার করলেও ভালো ছবি
আশা না করাই উচিত।
৬. ISO স্পীড:
ফিল্ম ক্যামেরায় স্পীড
নির্ধারিত হয় ফিল্মের
রাসায়নিক প্রলেপের আলোক-
সংবেদনশীলতা দিয়ে, বিভিন্ন
স্পীডের ফিল্ম পাওয়া যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরায় দরকার
ছিলো না, তবু ফিল্মের যুগের
সাথে মিল রাখার জন্য স্পীড
ব্যবস্থাটি প্রবর্তন করা হয়েছে।
সাধারণত স্পীড AUTO, 50, 100, 200,
400, 800, 1600, … – এরকম হয়। যত বেশি
স্পীডে ছবি তুলবেন, তত কম
আলোতে ছবি তুলতে পারবেন,
কিন্তু সেই সাথে ছবির মানও
খারাপ হতে থাকবে (নয়েজ)। ৪০০র
বেশি স্পীডে তোলা ছবি
দেখলে আপনার মন খারাপই হতে
পারে। AUTO স্পীডে থাকলে
আলোর অবস্থা বুঝে ক্যামেরার
সফটওয়্যারই সিদ্ধান্ত নেবে কত
স্পীডে ছবিটি তুলতে হবে।
চেষ্টা করবেন সবসময় যত কম ISO
স্পীডে পারা যায় ছবি তুলতে,
সবচেয়ে ভালো (কম সিগনাল-টু-
নয়েজ রেশিও) ছবিটি সবচেয়ে কম
ISO স্পীডেই পাওয়া যায়। আমার
নিজের জন্য সর্বোচ্চ স্পীড ১০০,
কদাচিত আলো খুব কম থাকলে ২০০
তে তুলেছি, তার উর্ধ্বে কখনোই
নয়।
৭। এফেক্ট:
অনেক ক্যামেরাতেই বিভিন্ন
রকমের এফেক্ট দিয়ে ছবি তোলার
ব্যাবস্থা আছে, যেমন: সাদা
কালো, সেপিয়া, নেগেটিভ,
ফটো ফ্রেম ইত্যাদি। এসব ব্যবহার
না করাই ভালো, কারণ ইচ্ছা
করলেই ছবি কম্পিউটারে নিয়ে
আপনি যে কোন এফেক্ট যোগ করতে
পারবেন।
Reade more >>